গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি:
সীমান্তবর্তী এলাকার সালুটিকর পুলিশ ফাঁড়ি সম্প্রতি পুলিশের অনিয়ম এবং সাধারণ মানুষ ও চোরাকারবারির মধ্যে বৈষম্যপূর্ণ আচরণের কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এএসআই সারওয়ার টাকার বিনিময়ে চোরাকারবারি ও মাদক চক্রকে ছাড় দিয়ে আসছেন, একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাচ্ছেন এবং হয়রানি করছেন।
২৮ অক্টোবর ২০২৫, বেলা ৩টায় সালুটিকর বাজারে অভিযান চালান এএসআই সারওয়ার। এ সময় বীরকুলী (মাঝপাড়া) গ্রামের লায়লা বেগম, তার মেয়ের জামাই আনিসুজ্জামান সাকি, এবং চোরাচালানে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশা (নং ১২-৪০০৯) আটক হন। জানা গেছে, লায়লা বেগম দীর্ঘদিন ধরে মেয়ের জামাইসহ চোরাচালান ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।
অভিযানের সময় স্থানীয়রা সরাসরি পুলিশকে জানায়, তবে অভিযোগ অনুযায়ী প্রায় দেড় লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে লায়লা বেগম ও চোরাচালান পণ্যসহ অটোরিকশা ছাড় দেওয়া হয়। ফলে শুধু আনিসুজ্জামান সাকিই একমাত্র আসামী হিসেবে মামলা (মামলা নং: জি আর ৩০০/২০২৫) দেখানো হয়।
স্থানীয়দের দাবি, সম্প্রতি আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। একটি সিএনজি গাড়ি এবং তার চালককে প্রথমে ফাঁড়িতে তোলা হয়। মূল চোরাকারবারিকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও চালকের কাছ থেকে টাকা না পাওয়ায় তাকে ফাঁড়িতে আনা হয়। পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে চালককে, এবং অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। এভাবে নিরীহ মানুষদের উপর হয়রানি করা হচ্ছে, অথচ মূল চোরাকারবারিরা টাকার বিনিময়ে অবাধে ব্যবসা চালাচ্ছে।
বীরকুলী গ্রামের এক প্রবীণ জানান, “আমরা বহুবার দেখেছি, পুলিশি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অপরাধীদের জন্য পথ পরিষ্কার করছেন। হাতেনাতে চোরাকারবারি আটক হলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
স্থানীয়রা বলছেন, এএসআই সারওয়ার চোরাকারবারি ও মাদক চক্রকে সহজে ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছেন।
এএসআই সারওয়ার মুঠোফোনে জানিয়েছেন, চোরাচালান মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, তবে ঘুষ গ্রহণ বা পণ্য ছাড়ার বিষয়ে মুখ খোলেননি। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম তালুকদারও বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। সিলেট জেলা পুলিশ সুপার জানান, “অপরাধের সত্যতা মিললে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


















