তুষার বাহিনীর ইমন এলাকার ত্রাস; অসহায় মানুষের আর্তনাদ
সিলেটের এয়ারপোর্ট এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তুষার বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান আবদুল আলিম তুষারের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরাও সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে অনেকেই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
এই তুষার বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসেবে পরিচিত আতিকুর রহমান ইমন। এয়ারপোর্টে এলাকার লাখাউরার মুহিবুর রহমান বেলালের ছেলে।
সে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ এয়ারপোর্ট শাখার সভাপতি। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। সে তার কিশোর বাহিনী দিয়ে পুরো বিমানবন্দর এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, নারী কেলেঙ্কারি – এমন কোনো অপরাধ নেই যা করেনি।
অসহায় মানুষদের শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিতে তার হাত কেঁপে উঠেনি। এমনকি একজন ভিক্ষুক দিনের শেষে যা সামান্য চাল কিনে আনতেন, তাও ছিনিয়ে নিতে দ্বিধা করত না এই সন্ত্রাসী বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুষার বাহিনীর সদস্যরা দিনের পর দিন ধরে এয়ারপোর্ট এলাকায় নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। তারা সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিল। কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেত না। তাদের ভয়ে এলাকার ব্যবসায়ীরাও ছিলেন তটস্থ। প্রায়ই তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হতো। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের দোকানে হামলা চালানো হতো।
শুধু তাই নয়, এই বাহিনীর সদস্যরা নারীদেরও হেনস্থা করত। তাদের লালসার শিকার হয়েছেন অনেক নারী। এমনকি স্কুল-কলেজের ছাত্রীরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। তুষার বাহিনীর সাগর,সাকিব পাবেল ওরাও ওতপেতে থাকতো। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ এদের যন্ত্রনায়। প্রতিটি পরিবারকে ভীষণ যন্ত্রণা দিয়েছে এই বাহিনী। সাধারণ মানুষকে শিবির বিএনপি বানিয়ে ধরিয়ে দিত পুলিশের হাতে। মানসিক শারিরীক নির্যাতনও করতো।
জানা যায়, ইমন ২০২০-২১ সালে একটি চুরি ও ডাকাতি মামলায় প্রায় এক বছর কারাভোগ করেন। জেল থেকে বের হয়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
ইমনের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। এই বাহিনীর সদস্যরা বিরোধী পক্ষের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায়। সম্প্রতি তারা ছাত্রদল নেতা নাবিল রাজাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা চালায়। ভাগ্যক্রমে নাবিল প্রাণে বেঁচে যান। এছাড়া, এই বাহিনী ছাত্রদল নেতা শিবলিকেও আক্রমণ করে।
৫ আগস্টের পর থেকে এই সন্ত্রাসীরা গা ঢাকা দিয়েছে। কেউ বিদেশে পালিয়েছে, আবার কেউ দেশে আত্মগোপন করে আছে। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিএনপির ছত্রছায়ায় থেকে এসব অপকর্ম করছে।
এলাকাবাসী অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।